‘আজ বুক ভরে নি:শ্বাস নিতে পারছি’ মেধাবী মেহেদীর পাশে দাঁড়াল শুভ সংঘ
পরিবারে সীমাহীন অভাবের কারণে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ডিডাব্লিউ ডি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র মেহেদী হাসান পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করতে পারছিল না। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দেওয়া হবে না এমন ভাবনা থেকে লেখা পড়ায়ও মন বসছিল না তার। একটি সূত্রে খবর পেয়ে শুভ সংঘের কর্মীরা গতকাল সোমবার দলবেঁধে হাজির তার বাড়িতে। বাড়ির সবার সাথে কথা বলতেই পাল্টে গেল পরিবারের গুমোট পরিবেশ । তারপর মেহেদীকে সাথে করে নিয়ে আসা হল শুভ সংঘের অস্থায়ী কার্যালয়ে । শুভসংঘের দেওয়া প্রয়োজনীয় টাকার খাম ও প্রাণ খোলা আশ্বাস পেয়ে মুহুর্তেই হাসিমুখ মেহেদী’র । জানাল, ‘শুভ সংঘের কথা অনেক শুনেছি। আজ তাদের জন্যই বুক ভরে নি:শ্বাস নিতে পারছি। ভালবাসার এই উপহার পাওয়ার দিন টিকে আমি কোনদিন ভুলব না। ’
মেহেদীদের বাড়ি দহবন্দ ইউনিয়নের জরমনদী ইউনিয়নে। নামেই বাড়ি । ছোট্ট জায়গার উপরে টিনের ঘর। মা কাজলী বেগম আর ছোট এক বোন সেই ঘরের বাসিন্দা। ৫-৬ বছর আগে স্বামী নূর ইসলাম স্ত্রী সন্তানরদন ত্যাগ করে চিটাগাং চলে যান। তিনি আর যোগাযোগ রাখেননি। কাজলী বেগমের লড়াই তখন থেকেই শুরু। ছেলে মেয়েদের মানুষ করতে দাঁতে দাঁত চেপে নিজের ছোট্ট একখন্ড জমিতে ফসল ফলিয়েছেন। কখনো কাজ করেছেন কৃষি ক্ষেত্রে, মানুষের বাড়িতে । মেহেদী লেখাপড়া শিখে মস্ত মানুষ হবে, পরিবারের অভাব ঘুচবে এই আশায় বুক বেঁধে দারিদ্র্যের সব আঘাত নিজে সয়েছেন। আবারও মেহেদীকে পৌঁছে দিতে গেলে
দু’হাত তুলে মা কাজলী বললেন, ‘খোদাতালার কাছে দোয়া করি বসুন্ধরা শুভ সংঘ’র সবাই যেন ভাল থাকে। আমার অস্বচ্ছল পরিবারের জন্য তারা যে কাজটি করল, তা ছোট কী বড় সে বিবেচনা করব না। আমি তাদের ভালবাসাটাই মনে রাখব।’
মেহেদীদের বাড়িতে গিয়েছিলেন শুভসংঘের উপজেলা সভাপতি মাহাবুব রহমান রণি, সাধারণসম্পাদক আমিনুল ইসলাম আকাশ , সিনিয়র সহসভাপতি মো. নূর আলম মিয়া নূর ,সহসভাপতি শরিফুজ্জামানসাগর, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আল মোতাকাব্বির মৃন্ময় অর্কসহ অন্যরা।
উপজেলা সভাপতি মাহাবুব রহমান রণি জানালেন, এত অভাব তারপরও মেধাবী মেহেদী সরাসরি কারো সাহায্যচায় নি। শুভ সংঘের বন্ধুরা খবর পেয়ে বিষয়টি কেন্দ্রে জানায়। সেখান থেকে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে আমরা ওর পড়াশোনার দিকটি খেয়াল রাখব।